📰 শেখ হেলাল ও শেখ তন্ময়ের বিরুদ্ধে ২০ কোটি টাকা চাঁদা দাবির মামলা
বাগেরহাট, 6 মে ২০২৫:
আওয়ামী লীগের কেন্দ্রীয় রাজনীতির পরিচিত মুখ এবং বাগেরহাট-১ আসনের সাবেক সংসদ সদস্য শেখ হেলাল উদ্দীন ও তাঁর ছেলে বাগেরহাট-২ আসনের সাবেক সংসদ সদস্য শেখ সারহান নাসের তন্ময়ের বিরুদ্ধে ২০ কোটি টাকা চাঁদা আদায়ের অভিযোগে মামলা দায়ের হয়েছে। এ ঘটনায় রাজনীতিসহ বিভিন্ন মহলে তীব্র প্রতিক্রিয়া দেখা দিয়েছে।
মামলার বাদী ‘নিউ বসুন্ধরা রিয়েল এস্টেট’-এর ব্যবস্থাপনা পরিচালক আবদুল মান্নান তালুকদার, যিনি নিজেও একসময় দুর্নীতি দমন কমিশনের (দুদক) অর্থ পাচার মামলার আসামি ছিলেন।
📄 মামলার বিবরণ
বাদীর অভিযোগ অনুযায়ী, ২০১৮ সালের ১৫ নভেম্বর এবং ২০১৯ সালের ৩ জানুয়ারি—দুই দফায় শেখ হেলাল, শেখ তন্ময় ও তাঁদের সহযোগীরা সরুই এলাকার একটি ব্যবসায়িক কার্যালয়ে গিয়ে ২০০ কোটি টাকা চাঁদা দাবি করেন।
চাপের মুখে মান্নান তালুকদার প্রথম দফায় ৭ কোটি ৩০ লাখ টাকা এবং দ্বিতীয় দফায় ১২ কোটি ৭০ লাখ টাকা প্রদান করেন বলে দাবি করেছেন।
👥 অভিযুক্তরা কারা?
মামলায় অভিযুক্তদের মধ্যে রয়েছেন:
-
শেখ হেলাল উদ্দীন (সাবেক এমপি, বাগেরহাট-১)
-
শেখ সারহান নাসের তন্ময় (সাবেক এমপি, বাগেরহাট-২)
-
মো. ফিরোজুল ইসলাম (শেখ হেলালের ব্যক্তিগত সহকারী)
-
শাহীন মিয়া (শেখ তন্ময়ের ব্যক্তিগত সহকারী)
-
শহীদুল ইসলাম (সহযোগী)
👮 পুলিশের পদক্ষেপ
বাগেরহাট সদর থানার ওসি মাহামুদ-উল-হাসান জানিয়েছেন, মামলাটি দণ্ডবিধির ৩৮৬ ও ৩৮৭ ধারা অনুযায়ী (চাঁদাবাজি ও ভয়ভীতি দেখিয়ে অর্থ আদায়) রুজু করা হয়েছে।
তিনি জানান, মামলার আসামি শহীদুল ইসলামকে গ্রেপ্তার করে কারাগারে পাঠানো হয়েছে। অন্যদের গ্রেপ্তারের চেষ্টা চলছে।
🔎 রাজনৈতিক প্রভাব ও বিতর্ক
রাজনৈতিক বিশ্লেষকরা মনে করছেন, ক্ষমতাসীন দলের প্রভাবশালী ব্যক্তিদের বিরুদ্ধে এ ধরনের মামলা নজিরবিহীন। বাদী দাবি করেছেন, "আগে রাজনৈতিক কারণে সাহস পাইনি, এখন পরিস্থিতি বদলেছে বলেই মামলা করেছি।"
এদিকে আওয়ামী লীগ ও সংশ্লিষ্ট মহলের পক্ষ থেকে এ বিষয়ে এখনো আনুষ্ঠানিক কোনো বক্তব্য পাওয়া যায়নি। তবে রাজনৈতিক অঙ্গনে এ নিয়ে নানা আলোচনা-সমালোচনা শুরু হয়েছে।
⚠️ বাদীর অতীত বিতর্কও আলোচনায়
মামলার বাদী আবদুল মান্নান নিজেও অতীতে অর্থ পাচারের মামলায় অভিযুক্ত হয়ে দীর্ঘদিন কারাভোগ করেন এবং বর্তমানে জামিনে মুক্ত।
এই পটভূমিতে অনেকেই মামলার উদ্দেশ্য নিয়েও প্রশ্ন তুলেছেন।
📌 উপসংহার
রাজনৈতিক ও ব্যবসায়িক প্রেক্ষাপটে এই মামলাটি দেশের রাজনীতিতে নতুন উত্তাপ ছড়িয়েছে।
সাবেক এমপি ও ক্ষমতাসীন দলের নেতাদের বিরুদ্ধে চাঁদাবাজির অভিযোগ শুধু বিচার বিভাগ নয়, গণতন্ত্র, সুশাসন এবং আইনপ্রয়োগের স্বচ্ছতা নিয়েও প্রশ্ন তুলছে।
আসন্ন সময়েই স্পষ্ট হবে, এই মামলার বিচারপ্রক্রিয়া কতটা স্বচ্ছ ও দ্রুত হয়।
📝 প্রস্তুত করেছেন: Taja News Media 24